মোঃ আব্দুর রহিম বাবলু:-
পল্লী বিদ্যুতের গণ গণ লোডশেডিং অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নাঙ্গলকোটবাসীর জনজীবন। অন্যদিকে চলতি মৌসুমে সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমির বোরো ধান নিয়ে শঙ্কা রয়েছে কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে বাতাসের আদ্রতা বেড়ে যাওয়ায় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এরিমধ্যে শুরু হয়েছে গণ গণ লোডশেডিং। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যুৎ থাকে ৩-৪ ঘন্টা। এতে করে সেচ পাম্পগুলো চালাতে পারছেন না। তাই বোরো ধান নিয়ে শঙ্কা রয়েছেন কৃষকরা। এ সময়ে জমিতে পানি না থাকলে ধান চিটা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ঈদ ঘিরে মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড় চলছে। এতে বিদ্যুৎ না থাকলে ক্রেতারা দোকানে আসতে চায় না। এনিয়ে মালিকগণ রয়েছে দুশ্চিন্তায়। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলার নাঙ্গলকোট পৌর সদরের মান্দ্রা গ্রামের কৃষক সাদেক হোসে বলেন, চলতি মৌসুমে এ বোরো ধান ফসল আমাদের প্রধান হাতিয়ার। বর্তমানে মজিগুলোর ধানের চড়া বাহির হওয়ার সময় হয়েছে। এ মুহুর্তে সব সময় জমিতে পানি রাখতে হবে। পানি না থাকলে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বিদ্যুৎ আসে আর যায়। পুরো দিনে ২০ শতক জমিও পানি দিয়ে বাসাতে পানি না। এ নিয়ে অনেক চিন্তায় আছি।
নাঙ্গলকোট বাজার ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, নাঙ্গলকোট পৌর বাজারে বিদ্যুৎ আসে আর যায়। এ ভাবে হলে আমরা কি ভাবে ব্যবসা করি বলি। দিন শেষে রাতে বাড়িতে গিয়ে এক ঘন্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। গরমে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্ট হয়।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট পল্লী বিদ্যুৎ ডিজিএম কামাল পাশা বলেন, কুমিল্লা ও ফেনী গ্রেড থেকে নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎ আসে। আর এ নাঙ্গলকোটে ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎতের চাহিদা রয়েছে। তার মধ্যে পাচ্ছি ১০-১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তাই লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি এই দুর্ভোগ কমাতে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এ সময় বোরো ধানের জমিতে পানি না থাকলে ধান চিটা হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই পল্লী বিদ্যুৎতের ডিজিএম এর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলা হয়েছে যাতে রাতের বেলায় লোডশেডিং একটু কম করে। পাশাপাশি জমিতে নিয়মিত ছত্রাক নাশক ঔষধ ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ ৪ এর জিএম মো. জাকির হোসেন বলেন, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ-৪ এর আওতায় ৩ লাখ গ্রাহক রয়েছে। তাদের বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে ৭২ মেগাওয়াট। বর্তমানে আমরা পাচ্ছি ৩৫-৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তাই একটু লোডশেডিং হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে এ লোডশেডিং আর থাকবে না। গরম ভাড়ার কারণে এমনটা হয়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তারজন্য কাজ করছি।