মোঃ আনিসুর রহমান আগুন, গাইবান্ধা থেকেঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে লম্পট প্রেমিকের ব্লাকমেইলের শিকার শাহারিয়ার জান্নাত ছোঁয়ামনি(১৬) নামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের নগর কাটগড়া মনমথ গ্রামে এই অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটে । এঘটনার নেপথ্য নায়ক বখাটে প্রেমিক নামের কুলাঙ্গার রায়হান কবীর মজিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। শনিবার (২৪শে ফেব্রুয়ারী) দুপুর ৩টায় কাটগড়া দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় এই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বামনডাঙ্গার রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
এতে কাটগড়া দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। নিহত শাহারিয়ার জান্নাত ছোঁয়া নগর কাটগড়া মনমথ গ্রামের শাহাজান মিয়ার কন্যা। সে কাটগড়া দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন।
অভিযুক্ত বখাটে প্রেমিক রায়হান কবীর মজিদ (১৮) বামনডাঙ্গা রেল কলোনি গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে এবং কাটগড়া দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনা ঘটার পর থেকে সে পলাতক আছে। এ রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত ইউডি মামলা ছাড়া অন্য কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। মানবন্ধনে নিহত শাহারিয়ার জান্নাত ছোঁয়ার বাবা শাহাজান মিয়া অভিযোগ করেন, বখাটে রায়হান কবীর মজিদ এলাকায় নেশাখোর হিসেবে পরিচিত এবং তার বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের মত অপরাধের একাধিক অভিযোগ আছে। রায়হান কবীর মজিদ তার মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন সময়ে অর্থ হাতিয়ে নিত। সর্বশেষ ব্লাকমেইল করে মেয়ের সর্বস্ব হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আরও টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেয়। মেয়ের কোচিং সেন্টার ও স্কুলে তার সহপাঠীদের মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভে- লজ্জায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। শাহাজান মিয়ার দাবি, রায়হান কবীর মজিদের কাছে এখনও কোন অডিও, ভিডিও কিংবা রেকর্ডিং থাকতে পারে যেটা দিয়ে সে তার মেয়েকে ব্লাকমেইল করত।
তিনি আরও অভিযোগ করেন টাকা না দেয়ার কারণে তার মেয়েকে হত্যার হুমকিও দিত বখাটে রায়হান কবীর মজিদ । নিহত ছোঁয়ার সহপাঠীরা জানান, রায়হান কবীর মজিদের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন সময়ে সে চাপ প্রয়োগ করে টাকা নিত। সর্বশেষে তাদের দুজনের ঘনিষ্ঠ কিছু সময় কাটানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিবে মর্মে চাপ দিত। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে আপত্তিকর কোন ছবি কিংবা ভিডিও দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে সে টাকা নিত।
এছাড়াও বখাটে মজিদ বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক ফেইক আইডি খুলে ও তার সহপাঠীদের মাধ্যমে ছোঁয়াকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত।